Archive for the ‘শেয়ার বাজার’ Category


যারা নতুন সবে মাত্র ব্যবসা শুরু করেছেন তাদের জন্য। কারন আমরা ভালমন্দ বিচার না করে শেয়ার কিনি পরে তা লোকসান দিয়ে বি্ক্রি করতে হয় ফলে আমাদের অনেক টাকা ক্ষতি হয়ে যায়। তখন চোখে অন্ধকার দেখা ছাড়া কিছুই থাকে না । যদি আমরা শেয়ার কেনার আগে একটু সচেতন হই তাহলে আমার মনে হয় থুব বেশি ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে আমরা রেহাই পাব। প্রথমে আমি আপনাদের ভাল ক্যাটাগরির শেযার কেনার পরামর্শ দেব। মার্কেটে বিভিন্ন ক্যাটাগরির শেয়ার আছে যেমন : এ, বি, জি, এন এবং জেট ।
এবার বলি কো্নটা কি ?
১. এ ক্যাটাগরির শেয়ার : যে সব কোম্পানী প্রতিবছর বার্ষিক সাধরনষভা করে এবং ১০% বা তার অধিক লভ্যাংশ দেয়।
২. বি ক্যাটাগরির শেয়ার : যে সব কোম্পানী প্রতিবছর বার্ষিক সাধরনসভা করে কিন্তু ১০% এর নিচে লভ্যাংশ দেয়।
৩. জি ক্যাটাগরির শেয়ার : যে সকল এখনো বানিজ্যিক কার্য্ক্রম শুরু করেনি সেই সব কোম্পানী ।
৪. এন ক্যাটাগরির শেয়ার : সদ্য তালিকাভুক্ত কোম্পানীকে এন ক্যাটাগরির মধ্যে রাখা হয় । পরে লভ্যাংশ ও বার্ষিক সভার উপর ভিত্তি করে অন্য ক্যাটাগরিতে নেওয়া হয়।
৫. জেট ক্যাটাগরির শেয়ার : যে সকল কোম্পানি নিয়মিত বার্ষিক সাধারন সভা করতে ব্যার্থ। লভ্যাংশ প্রদান করতে ব্যার্থ। পুঞ্জিভুত লোকসান পরিশোধিত মুলধনকেও ছাড়িয়ে যায়। ছয় মাস বা ততোধিক কাল সময় উতপাদন বন্ধ থাকে।
** কোনটা কোন ক্যাটাগরির শেয়ার তা জানার জন্য ভিজিট করুন। http://sharestockmarket.blogspot.com    http://www.dsebd.org । বিস্তারিত তথ্য এই সাইটে পাবেন।
শেয়ার কেনার আগে আপনাকে আরো কিছু ধারনা দিতে চাই যে গুলি খুবই গুরুত্বপুর্ন যেমন :
শেয়ার প্রতি আয় ( Earning per share) EPS : Eps= কর-বাদ নিট মুনাফা/মোট ইক্যুইটি শেয়ারের সংখ্যা। এটি অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ন অনুপাত যা শেযার হোল্ডার দের বলে দেয় তারা প্রতি শেয়ারে কত লাভ করেছ। ভাল লাভ হলে ভাল ডিভিডেন্ট পাওয়ার আশা থাকে আর লাভ কম হলে ডিভিডেন্ট ছাড়াই সন্তুষ্ট থাকেতে হয়।
ডিভিডেন্ড আয় উতসারন অনুপাত(dividend yield ratio)Dyr=(শেয়ার প্রতি ডিভিডেন্ট প্রদান/বাজার মুল্য প্রতি শেয়ার)*১০০
এটা একজন বিনিয়োগ কারী বাজার মুল্যে শেয়ার কিনে যে মুনাফা পায় তার শতকরা হার।দ্বিতীয় স্তরের বাজার থেকে শেয়ার কিনলে অনেক সময় ইস্যু মুল্যের উপরে মুল্য প্রদান করে কিনতে হয়। আবার কখনো কখনো ইস্যু মুল্যের কমেও পাওয়া যায়।
মুল্য-আয় অনুপাত(price earning ratio: P/E)PE= প্রতি ইক্যুইটি শেয়ারের বাজার মুল্য/শেয়ার প্রতি আয়।এটাও খুব গুরুত্ত্বপুর্ন সমীকরন।যখন বাজার চাঙ্গা থাকে তখন পিই উচুতে থাকে আর মন্দা হলে এটা কম থাকে। অস্বাভাবিক অবস্থা ছাড়া পিই সাধারনত এর বিগত কয়েক বছরের গড় মানের কাছা কাছি থাকে।
আপনি ঢাকা ষ্টক এর ওয়েবসাইডে সব কোম্পানীর পিই পাবেন । যেই শেয়ার পিই যতবেশি সেই শেয়ার কেনা ততবেশি ঝুকিপৃর্ন । আপনি সাধরনভাবে ১৫-২০ পিই ক্যাটাগরির শেয়ার কিনতে পারেন । ২০-২৫ পিই ক্যাটাগরির শেয়ার কিনার আগে একটু চিন্তা করে কিনুন যদি ঔ কোম্পানীর সুনাম ভাল থাকে বা নামকরা কোম্পানী হয় তবে কিনতে পারেন । যদি পিই ৩০ এর উধ্বে হয় তবে শেয়ার কেনা ঝুকিপুর্ন হয়ে যাবে। আমি আপনাদের পথ দেখিযে দিলাম এর পর গানিতিক হিসাব নিকাশ করে আপনার নিজ দয়িত্বে শেয়ার কিনবেন।


কোন শেয়ার কিনবেন? কিভাবে? কতটা?
শেয়ার কেনার চেক লিস্ট
১। P/E দেখুন। এটা অবশ্যই ১৬ বা তার নিচে হওয়া উচিত। যত কম তত ভাল 🙂
২। NAV দেখুন। এর সাথে বাজার মূল্যের একটা সামান্জস্ব থাকা উচিত। যার NAV ৩০০ টাকা তার বাজার মূল্য ৭০০ টাকার নিচে হওয়া উচিত।
৩। EPS দেখুন। এটা যত বেশি হবে ততই ভাল।
৪। মোট শেয়েরের সংখ্যা দেখুন। আর দেখুন তার কতটুকু পাবলিকের হাতে আছে। নিয়মিত গ্রহনযোগ্য মাত্রায় লেনদেন হয় এমন শেয়ারই কেনা উচিত।
৫। authorized capital আর Paid-Up Capita এর রেশিয়ো দেখুন। যদি ২ টা খুব কাছাকাছি হয় তবে ঐ কম্পানি কখনই কোন বোনাস শেয়ার দিবে না।
৬। গত ৩-৪ বছরের ট্রেক রেকর্ড দেখুন। কী পরিমান বোনাস দেয় তা দেখুন। বাৎসরিক গড় মূল্য দেখুন। চেষ্টা করুন এই মূল্যার কাছাকাছি দামে শেয়ার কিনতে।
৭। লাস্ট ৫-৬ মাসের খবর দেখুন (ডিএসই’র সাইটে প্রকাশিত)
৮। ডিএস ই এখন ৪ মাস পর পর কম্পানির আর্নিং রিপোর্ট দেয়। একটু মাথা খাটালেই বছর শেষে কি পরিমান লাভ করবে তা জানা সম্ভব।
৯। আর কম্পানির গুড উইল ও এর পরিচালকদের সামাজিক অবস্থান (রাজনৈতিক দইকটাও দেখবেন 🙂 ) বিবেচনা করুন।

মনে রাখবেন বিক্রির সময় নয় বরং কেনার সময়ই আপনাকে লাভ করতে হবে। ব্যাক্তিগত ভাবে ‘ডাউন মার্কেট’ ই হল আমার প্রিয় বিনিয়োগের সময় 🙂

কি ভাবে কিনবেন ?
ধরুন আপনি শেয়াক ক এর ১০ টা লট কিনতে চান। সাধারনত আমরা এক বারেই ১০ টা লট কিনেফেলি 🙂 আর এতে আমাদের লাভ বা লোকশানের ঝুকি অনেক অনেক বেরে যায়। বরং এক বারে ১০ লট না কিনে ৩-৪ বারে কিনুন – এই স্ট্রটেজিতে লাভের পরিমান কমে যাওয়ার (বুলিশ মার্কেটে) চান্স থাকলেও লসের পরিমান একদমই নেই। একে বলা হয় এভারেজিং টেকনিক।

বিক্রির ক্ষেত্রেও একই ফরমূলা 🙂 সব একবারে বেচে না দিয়ে ২-৩ বারে বেচুন (বুলিশ মার্কেটে)।

কতটুকু কিনবেন ?

এটা নির্ভর করে আপনার পোর্টফলিও এর ডিজাইন ও তার বর্তমান অবস্থার উপর। সহজ কথায় এক কম্পানি ও এক সেক্টরের শেয়ার না কিনে ২-৩ সেক্টরের শেয়ার কেনা উচিত এবং প্রতি সেক্টরেরই ২-৪ টা কম্পানির শেয়ার আপনার পোর্টফলিওতে থাকা উচিত। (শর্ত যদি ইকুইটি বেশি থাকে) আর যারা অল্প পুঁজি
নিয়ে বিজনেস করছেন তারা ২ টার উপরে না ‍যাওয়াই ভালো


মিচুয়াল ফান্ড, বন্ড, জিরো কুপন বন্ড কি ?

ডিএসই -এর নতুন বিনিয়োগকারীদের প্রধান সমস্যা হলো তথ্যের অভাব ও জ্ঞানের সল্পতা ফলে অতি সহজেই গুজব ও ভুল তথ্যের উপর নির্ভর করে ধরা খাওয়া এক কথায় অতি সাধারন ঘটনা নতুনদের জন্য। এ রকম একটা ব্যপার নিয়েই আজকের আলোচনা করি, কি বলেন?

নতুনদের পাশাপাশি শেয়ারবাজারের অনেক বিনিয়োগকারীই সাধারন শেয়ার, মিচুয়াল ফান্ড, জিরো কুপন বন্ড, বন্ড ইত্যাদির পার্থক্য বোঝেন না। ফলে সবগুলকেই এক জিনিস মনে করে ধরা খান।মিচুয়াল ফান্ড: ধরুন আপনার বন্ধু করিম অনেক দিন ধরেই শেয়ার বাজারে আছে। ছোট বড় ঠেলা-ধাক্কা খেয়ে স্বশিক্ষিত হইছে  মানে ব্যবসাটা বেশ ভালই বোঝে আর কি । তাই নতুন বিনিয়োগকারী বন্ধুরা মিল্লা ঠিক করলেন একা একা ধরা না খাইয়া সবার পুজি করিমরে দিলেন ব্যাবসার জন্য যাতে সে নিজের বুদ্ধি খাটিইয়া ভাল ব্যবসা করবার পারে।মানে বলতে পারেন এক ধরনের সমবায় সংঘ যার পরিচালনার ভার পরেছে আপনার ঐ বন্ধুর কাধে। ঠিক এই কাজটিই করে মিচুয়াল ফান্ড ম্যানেজার, ফান্ডের ই্উনিট হোল্ডারদের টাকা বিনিয়োগ করা হয় শেয়ার বাজারে এবং এই বিনিয়োগের লাভ-লোকশানের অংশিদার হল ফান্ডের ই্উনিট হোল্ডারগন। সুতরাং মিচুয়াল ফান্ড কোন কম্পানি শেয়ার নয় এবং তার আয়-রোজগার সম্পূর্ন নির্ভরকরে শেয়ার বাজারের খারাপ-ভাল অবস্থার উপর।ধরুন মিচুয়াল ফান্ড ক এর মোট মূলধন ১০,০০০ টাকা এবং ইউনিট সংখ্যা ১০০ অর্থাৎ ফেস ভ্যালু ১০ টাকা। এই টাকায় শেয়ার ১,২,৩ কেনা হয়েছিল শুরুতে যার বর্তমান বাজার মূল্য ১২,৫০০ টাকা। মানে মিচুয়াল ফান্ডের বেসিক NAV ১০ টাকা এবং চলতি NAV ১২’৫ টাকা। ধরুন বছর শেষেও একই অবস্থা অতএব প্রতি ইউনিটে আয় ২’৫ টাকা যার ১ টাকা বোনাস দেয়া হল এবং বাকি ১’৫ আগের ১০ টাকার সাথে যোগ করে পুনরায় বিনিয়োগ করা হলো। এই ভাবে ৩-৪ বছর পর দেখা গেল ঐ মিচুয়াল ফান্ডের বেসিক NAV ১৪ টাকা এবং চলতি NAV ১৭’৫ টাকায় দাড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন হল আপনি এই মিচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কিনতে গেলে কত টাকায় কিনবেন ?

আইডিয়াল সিচুয়েশনে ১৪ টাকা এবং রিয়েল সিচুয়েশনে ১৭’৫ টাকা বড় জোর ১৮-২০ টাকা। কিন্তু আমাদের বাজারে এই শেয়ার বিক্রি হয় ৩০-৫০ টাকায়। পৃথিবীর সব মার্কটে মিচুয়াল ফান্ড ইউনিটের দাম তার চলতি NAV এর ধারে কাছে হয়।

জিরো কুপন বন্ড বা বন্ড : এটা অনেকটা সরকারী সন্চয় পত্রের মত পার্থক্য হল এর কিছু অংশ মেয়াদ শেষে শেয়ারে কনভার্ট হয়। ধরুন কম্পানি খ ৫ বছর মেয়াদি ১,৫০০ টাকার বন্ড ছাড়ল যা ১০০০ টাকায় বিক্রি হবে এবং এর ১০% শেয়ারে কনভার্ট করা হবে। এখন আপনি এই বন্ড ১০০ টা কিনলেন।

বিনিয়োগ: ১০০০*১০০ =১,০০,০০০ টাকা

এখন ৫ বছর পর আপনি পাবেন –

১৫০০*৯০ =১,৩৫,০০০ টাকা এবং ঐ কম্পানির ১০ টি শেয়ার।

প্রসংগত এই ৫ বছরে কম্পানি আপনাকে কোন লভ্যাংশ দেবে না। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এটা সাধারন শেয়রের মত নয়। মূলত ধীর্ঘস্থায়ী বিনিয়োগের জন্যই বন্ড কেনা উচিত।

এই বন্ড ও মিচুয়াল ফান্ড মূলত সবচেয়ে সেফ বিনিয়োগ হিসেবে সারা বিশ্বে জনপ্রিয় এবং এগুলোর দাম খুব বেশি ওঠা-নামা করে না অর্থাৎ তা বাজার স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে । অথচ আমাদের দেশে বিনিয়োগকারীদের অগ্যতার সুযোগ নিয়ে বেশি দামে এগুল তাদেরকে গছিয়ে দেয়া হয় যা বাজারকে স্থিতিশীল করার পরিবর্তে আরো অস্থিতিশীল করে। সুতরাং বন্ড ও মিচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করার আগে ভাল ভাবে যাচাই-বাছাই করে স্বীদ্ধান্ত নিন।

বাজার চিত্র :  মনে রাখা উচিত মার্কেট ম্যানুপুলেশন হয়ত ক্ষনিকের জন্য কোন শেয়ারের দাম আকাশে বা পাতালে নামিয়ে দিতে পারে কিন্তু অবশ্যই তা ক্ষনস্থায়ী সময়ের জন্য। তাই ভাল মৌল ভিত্তির শেয়ার কিনুন লাভ বেশি না হলেও ক্ষতির শিকার হবেন না।সর্বশেষে একটা কথা না বললেই নয় নিজে জানুন অন্যকেউ জানান ধন্যবাদ