Archive for মে 6, 2012


হাইড্রোসিল হলো অন্ডকোষের চারপাশে ঘিরে থাকা একটি পানিপূর্ণ থলি, যার কারণে অন্ডথলি ফুলে যায়। এই পানিটা প্রকৃতপক্ষে জমে থাকে অন্ডকোষের দুই আবরণের মাঝখানে। জন্মের সময় প্রতি ১০ জন পুরুষ শিশুর মধ্যে প্রায় একজনের হাইড্রোসিল থাকে, তবে অধিকাংশ হাইড্রোসিল চিকিৎসা ছাড়াই প্রথম বছরের মধ্যে মিলিয়ে যায়। আর পুরুষদের সাধারণত ৪০ বছরের ওপরে- অন্ডথলিতে প্রদাহ বা আঘাতের কারণে হাইড্রোসিল হতে পারে।

হাইড্রোসিলের সাধারণত ব্যথা হয় না। সাধারণত হাইড্রোসিল ক্ষতির নয়। অনেক সময় চিকিৎসার প্রয়োজন নাও হতে পারে। তবে আপনার যদি অন্ডকোষ ফুলে যায় তাহলে অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। দেখতে হবে অন্যকোনো কারণে যেমন অন্ডকোষের ক্যান্সার বা অন্যরোগে অন্ডকোষ ফুলে গেছে কি না।

উপসর্গ : হাইড্রোসিলের প্রধান উপসর্গ হলো ব্যথাবিহীন ফোলা অন্ডকোষ। পানি ভর্তি বেলুনের মতো অনুভূত হয়। হাইড্রোসিল একটি বা দু’টি অন্ডকোষেই হতে পারে।

কারণ : ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে গর্ভে থাকা অবস্থায় হাইড্রোসিল হতে পারে। গর্ভাবস্থায় প্রায় ২৮ সপ্তাহে স্বাভাবিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শিশুর অন্ডকোষ উদর গহ্বর থেকে অন্ডথালিতে নেমে আসে। প্রতিটা অন্ডকোষের সাথে একটি স্যাক বা থলি (প্রোসেসাস ভ্যাজাইনালিস) থাকে, এর মধ্যে পানি জমে।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই স্যাক বা থলি বন্ধ হয়ে যায় এবং পানি শোষিত হয়। তবে থলি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও যদি পানি থেকে যায় তাহলে সেই অবস্থাকে বলে ননকমিউনিকেটিং বা সংযোগবিহীন হাইড্রোসিল। কারণ এ ক্ষেত্রে থলি বন্ধ হয় কিন্তু পানি পেটে ফিরে যেতে পারে না। সাধারণত এক বছরের মধ্যে পানি শোষিত হয়ে মিলিয়ে যায়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে থলি খোলা থাকে। এ অবস্থাকে বলে কমিউনিকেটিং বা সংযোগকারী হাইড্রোসিল। থলির আকৃতি পরিবর্তিত হতে পারে, কিংবা অন্ডথলিতে চাপ দিলে পেটে ফিরে যেতে পারে।

বয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে অন্ডথলির মধ্যে প্রদাহ বা আঘাতের ফলে হাইড্রোসিল হতে পারে। অন্ডকোষ বা এপিডিডাইমসে সংক্রমণ ঘটলে হাইড্রোসিল হতে পারে।

ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলো

অধিকাংশ হাইড্রোসিল জন্মের সময় থাকে। একে বলে জন্মগত হাইড্রোসিল। অন্য অবস্থাগুলো সাধারণত ৪০ বছর বয়সে বা তার বেশি বয়সে আক্রমণ করে। হাইড্রোসিলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে:

০ অন্ডথলিতে আঘাত

০ ইনফেকশন বা সংক্রমণ

০ রেডিয়েশন থেরাপি বা রশ্মির সাহায্যে চিকিৎসা।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন

আপনার নিজের জন্য : যদি আপনার অন্ডথলি ফোলা দেখতে পান তাহলে অতিসত্বর চিকিৎসকের কাছে যান। অন্ডথলি ফুলে যাওয়ার কারণ নির্ণয় করা খুবই জরুরি, বিশেষ করে এটা টিউমার কি না তা নিশ্চিত হতে হবে। কখনো কখনো হাইড্রোসিলের সাথে ইনগুইনাল হার্নিয়া থাকে। এক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন।

আপনার শিশুর জন্য : শিশুদের ক্ষেত্রে হাইড্রোসিল সাধারণত নিজে নিজেই মিলিয়ে যায়। তবে যদি আপনার শিশুর হাইড্রোসিল এক বছরের পর মিলিয়ে না যায় কিংবা ওটা আরো বড় হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

রোগ নির্ণয় : সাধারণত শারীরিক পরীক্ষা করে হাইড্রোসিল নির্ণয় করা হয়। অন্ডথলি ফুলে যেয়ে বড় হয় এবং চাপ দিলে ব্যথা লাগে না। সাধারণত চারপাশের পানির কারণে অন্ডকোষে হাত দিয়ে অনুভব করা যায় না। পেটে কিংবা অন্ডথলিতে চাপ দিলে কখনো কখনো পারিপূর্ণ থলি বড় বা ছোট হতে পারে, এরকম হলে বুঝতে হবে ইনগুইনাল হার্নিয়া রয়েছে।

যেহেতু হাইড্রোসিলের পানি সাধারণত স্বচ্ছ হয়, তাই আপনার চিকিৎসক অন্ডথলিতে টর্চের আলো ফেলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। হাইড্রোসিলের ক্ষেত্রে আলোর অন্ডকোষের বাইরের রেখা দেখা যাবে, এতে বোঝা যাবে ওটার চারপাশে স্বচ্ছ পানি রয়েছে। যদি আপনার চিকিৎসক সন্দেহ করেন যে আপনার হাইড্রোসিল প্রদাহের কারণে হয়েছে, তাহলে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা রোগ নির্ণয়ে সহায়ক হতে পারে।

অন্ডকোষের চারপাশে পানি থাকে বলে অন্ডকোষ হাত দিয়ে অনুভব করা নাও যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অন্য পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে। সম্ভাব্য পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে-

০ আল্ট্রাসাউন্ড ইমেজিং

০ পেটের এক্সরে।

জটিলতা

হাইড্রোসিল সাধারণত বিপজ্জনক নয় এবং সাধারণত এটা প্রজননের ক্ষেত্রে কোনো হস্তক্ষেপ করে না। তবে নিচের অবস্থাগুলোর সাথে এটা সম্পৃক্ত থাকতে পারে, সে ক্ষেত্রে এটা মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে-

০ ইনফেকশন অথবা টিউমার : এগুলো শুক্রাণু উৎপাদনে বা শুক্রাণুর কাজে বাধা দিতে পারে।

০ ইনগুইনাল হার্নিয়া : হার্নিয়া আটকে গেলে জীবন-মরণ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এ ছাড়া সচরাচর যেসব জটিলতা দেখা দিতে পারে সেসব হলো :

০ চলাফেরার অসুবিধা

০ যৌন মিলনে সমস্যা

০ হাইড্রোসিল বেশি বড় হলে অন্ডকোষের রক্ত সরবরাহে প্রতিবন্ধকতা।

চিকিৎসা : শিশুদের ক্ষেত্রে এক বছরের মধ্যে হাইড্রোসিল আপনা আপনি মিলিয়ে যায়। যদি হাইড্রোসিল এক বছর পরেও মিলিয়ে না যায় কিংবা আরো বড় হতে থাকে তাহলে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষদের ক্ষেত্রে হাইড্রোসিল বড় হয়ে অস্বস্তি ঘটালে অথবা আকৃতির কারণে অপারেশনের প্রয়োজন হয়। অপারেশন সর্বদা দক্ষ সার্জন দিয়ে করাতে হবে।

ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
জেনারেল ও ল্যাপারস্কপিক সার্জন
চেম্বার : কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা, ফোন : ০১৭১৬২৮৮৮৫৫।


অণ্ডথলি ফুলে যাওয়া হলো অণ্ডথলি অস্বাভাবিক বড় হওয়া। আর অণ্ডথলি হলো এমন একটা থলি যার মধ্যে অণ্ডকোষ থাকে।

যেকোনো বয়সী পুরুষের অণ্ডথলি ফুলে যেতে পারে। এর সাথে ব্যথা থাকতে পারে, আবার না-ও থাকতে পারে।

এটা অণ্ডথলির এক পাশে অথবা দু’পাশেই হতে পারে। অণ্ডকোষ এবং পুরুষাঙ্গ জড়িত থাকতে পারে, অথবা না-ও থাকতে পারে।

অণ্ডথলি ফুলে যাওয়ার কারণ-

০ আঘাত

০ হার্নিয়া

০ কনজেসটিভ হার্ট ফেইলিওর

০ হাইড্রোসিল

০ অণ্ডকোষের প্রদাহ

০ অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া

০ ভ্যারিকোসিল বা অণ্ডথলির শিরার স্ফীতি

০ কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ

০ যৌনাঙ্গ এলাকায় শল্য চিকিৎসা

অণ্ডকোষে প্যাঁচ খাওয়া একটি মারাত্মক জরুরি অবস্থা। এ ক্ষেত্রে অণ্ডথলির মধ্যে অণ্ডকোষ পেঁচিয়ে যায় এবং এর ফলে অণ্ডকোষে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যদি দ্রুত প্যাঁচ খোলা না যায় তাহলে অণ্ডকোষ স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ঘরোয়া চিকিৎসা

০ প্রথম ২৪ ঘণ্টা অণ্ডথলিতে বরফের সেক দিতে হবে। এরপর সিজবাথ নিলে ফোলা কমবে।

০ যদি ব্যথা তীব্রহয় তাহলে একটি তোয়ালে পাকিয়ে অণ্ডকোষের ঠিক নিচে দু’পায়ের মাঝে রাখতে হবে। এতে ব্যথা ও ফোলা দুটোই কমবে।

০ দৈনন্দিন কাজ করার পর ঢিলেঢালা অ্যাথলেটিক সাপোর্টার পরা যেতে পারে। ফোলা কমে যাওয়া না পর্যন্ত কাজকর্ম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন

যদি আপনার অণ্ডথলি ফুলে যায়, যদি ফোলাটা ব্যথাযুক্ত হয়, কিংবা যদি অণ্ডকোষে চাকা অনুভব করেন তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।

চিকিৎসক যা করবেন

চিকিৎসক আপনাকে শারীরিক পরীক্ষা করবেন ও রোগের ইতিহাস নেবেন। তিনি আপনাকে নিচের প্রশ্নগুলো উত্তর জানতে চাইতে পারেন-

০ কখন ফোলা শুরু হয়?

০ এটা হঠাৎ করে হয়েছে?

০ অবস্থা আরো খারাপ হচ্ছে?

০ ফোলাটা কত বড়?

০ ফোলাটায় কি পানি জমেছে?

০ ফোলা কি অণ্ডথলির এক দিকে, নাকি সমগ্র অণ্ডথলিতে?

০ দু’পাশের ফোলা কি একই ধরনের? (কখনো কখনো অণ্ডথলির ফোলা প্রকৃতপক্ষে বড় অণ্ডকোষ, অণ্ডকোষে চাকা অথবা শুক্রবাহী নালির ফুলে যাওয়ার কারণে হয়।)

০ আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কোনো অপারেশন হয়েছে?

০ আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কি কোনো আঘাত পেয়েছেন?

০ আপনার যৌনাঙ্গ এলাকায় কি সম্প্রতি কোনো সংক্রমণ হয়েছে?

০ আপনি বিছানায় বিশ্রাম নিলে কি ফোলা চলে যায়?

০ আপনার অণ্ডথলিতে কি কোনো ব্যথা আছে?

চিকিৎসক যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ দিতে পারেন।

ডা. মিজানুর রহমান কল্লোল
জেনারেল ও ল্যাপারোস্কপিক সার্জন এবং মূত্ররোগ বিশেষজ্ঞ। চেম্বার : কমপ্যাথ লিমিটেড, ১৩৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।


শরীর থেকে বর্জ্য নিঃসরণ কিডনি ও মূত্রতন্ত্রের মূল কাজ। শরীরে পানি ও লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও কিডনি মূত্রতন্ত্র রাখে বিশেষ অবদান। বর্জ্য নিঃসরণে মূত্রতন্ত্রের অপর্যাপ্ত ক্ষমতা বা অক্ষমতায় এসব বর্জ্য শরীরে জমা হয়ে আমাদের শরীরের সুস্থ আবহকে বিঘ্নিত করে।

স্বাভাবিক প্রস্রাবের অভ্যাস কেমন?
একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় সাধারণত ২ দশমিক ৫ থেকে তিন লিটার পানি বা পানীয় পান করে থাকে।
কিডনির কাজ করার ক্ষমতা স্বাভাবিক থাকলে, পারিপার্শ্বিক আবহাওয়ার খুব বড় তারতম্য না হলে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৫০০ সিসি প্রস্রাব কিডনি তৈরি করে থাকে। আমাদের শরীর থেকে কিছু পানি ঘাম আকারে, কিছু পানি শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে, কিছু পানি মলের সঙ্গে বের হয়ে যায়।
যেহেতু আমাদের প্রস্রাবের থলির স্বাভাবিক ধারণক্ষমতা ৩০০ সিসি, তাই স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ ২৪ ঘণ্টায় পাঁচবার প্রস্রাব করে থাকে।
সাধারণত দিনে চারবার আর রাতে একবার।
তবে নানাবিধ স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক কারণে বারবার প্রস্রাবের প্রবণতা দেখা দিতে পারে, আবার কমেও যেতে পারে। যদি আমরা অতিরিক্ত পানি বা তরলজাতীয় খাবার খাই, তবে প্রস্রাবের পরিমাণ বেশি হয়, বারবার প্রস্রাব হয়। বারবার প্রস্রাব হয় ডায়াবেটিসেও। অন্যদিকে পুরুষের ক্ষেত্রে বয়োবৃদ্ধির সঙ্গে বয়সজনিত স্বাভাবিক পরিবর্তন হিসেবেই বৃদ্ধি ঘটে প্রোস্টেট গ্রন্থির। প্রোস্টেট গ্রন্থি প্রস্রাব প্রবাহে বাধার সৃষ্টি করে। ফলে প্রস্রাবের থলি সব সময় সম্পূর্ণ খালি হয় না। আর বৃদ্ধি পাওয়া প্রোস্টেট সৃষ্টি করে প্রস্রাবের থলির মুখে এক ধরনের অস্বস্তি।
বয়োবৃদ্ধির কারণে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার প্রস্রাবের থলিরই ধারণক্ষমতা কমে যায়। বারবার প্রস্রাব করার প্রবণতা বেড়ে যায়।

প্রস্রাব করা বা না করার এই নিয়ন্ত্রণ কি সব সময় রক্ষা করা সম্ভব?
না। তবে অবশ্যই তা স্বাভাবিক নয়। নানা ধরনের স্নায়ুবিক অসুস্থতা, প্রস্রাবের থলির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে যেসব স্নায়ু তার বৈকল্য বা সমন্বয়হীনতা, প্রস্রাব প্রদাহে, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বৃদ্ধি ও প্রস্রাবের থলির নানাবিধ অসুস্থতায় এ নিয়ন্ত্রণ সাময়িক বা স্থায়ীভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। ব্যক্তি যখন এ নিয়ন্ত্রণ হারায়, তখন সে আর পারে না নিজ ইচ্ছানুসারে প্রস্রাব করতে। কখনো কখনো কারও কারও ক্ষেত্রে ঘটে অনভিপ্রেত অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজের অজান্তে প্রস্রাব ঝরে যাওয়ার মতো বিব্রতকর ঘটনা, যা কেবল অসুস্থতাই নয়, সামাজিকভাবে বিব্রতকরও বটে। তবে এসবই নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও নিরাময়যোগ্য। প্রয়োজন শুধু সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

স্বাভাবিক প্রস্রাব কেমন?
স্বাভাবিক প্রস্রাব পরিষ্কার, রংহীন বা হলুদাভ। প্রস্রাব পরিত্যাগের প্রক্রিয়াটি বাধাহীন, ব্যথাশূন্য সম্পূর্ণই স্বস্তিকর। প্রক্রিয়াটি শুরু করা যায় নিজ ইচ্ছায়, প্রয়োজন হয় না কোনো চাপ দেওয়ার। গতি থাকে একটানা, শেষ হয় ২০ সেকেন্ডে।
প্রক্রিয়াটি শেষ করে অনুভব করা যায় এক স্বাভাবিক পরিতৃপ্তি।
যদি প্রস্রাব হয় ঘোলা, অতিরিক্ত ফেনাযুক্ত বা অস্বাভাবিক দুর্গন্ধযুক্ত, প্রক্রিয়াটি যদি হয় ব্যথা, জ্বালা-যন্ত্রণাপূর্ণ, তাহলে এটি স্বাভাবিক নয়। এমনটা হতে পারে প্রস্রাবের প্রদাহসহ নানাবিধ অসুস্থতায়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন সঠিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। প্রস্রাবের রং যদি লাল হয় বা থাকে, তাতে রক্তের অস্তিত্বের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। ব্যথাশূন্য প্রস্রাব পরিত্যাগ-প্রক্রিয়ায় যদি প্রস্রাবে রক্ত থাকে, তবে তা নিতে হবে অতীব জরুরি ও ঝুঁকিপূর্ণ স্বাস্থ্যসমস্যা হিসেবে। সামান্য কালক্ষেপণও এ ক্ষেত্রে হতে পারে অসামান্য ক্ষতির কারণ। অথচ সময়োপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ, রোগনির্ণয় ও উপযুক্ত চিকিৎসায় এ ধরনের জীবনঘাতী অসুস্থতা নিয়ন্ত্রণ নয় শুধু, অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময় সম্ভব।

কাজী রফিকুল আবেদীন
সহকারী অধ্যাপক, ইউরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি


ব্লুটুথ (ইংরেজি ভাষায়: Bluetooth) ক্ষুদ্র পাল্লার জন্য প্রণীত একটি ওয়্যারলেস প্রোটোকল। এটি ১-১০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে ওয়্যারলেস যোগাযোগের একটি পদ্ধতি। ব্লুটুথ-এর কার্যকরী পাল্লা হচ্ছে ১০ মিটার। তবে বিদ্যুৎ কোষের শক্তি বৃদ্ধি করে এর পাল্লা ১০০ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। ব্লুটুথ ২.৪৫ গিগাহার্টজ-এ কাজ করে। ৯০০ খ্রীস্টাব্দের পরবর্তী সময়ের ডেনমার্কের রাজা Harald Bluetooth-এর নামানুসারে এই প্রযুক্তির নামকরণ করা হয়েছে। ব্লুটুথ ১.০-এর তথ্য আদান-প্রদান-এর সর্বোচ্চ গতি ছিল সেকেন্ডে ১ মেগাবিট। বর্তমানে ব্লুটুথ ২.০-এর সর্বোচ্চ গতি হল সেকেন্ডে ৩ মেগাবিট।

ব্লুটুথ প্রোটোকল বাস্তবায়নকারী যন্ত্রাংশ বা ডিভাইসগুলি দ্বিমুখী সংযোগ স্থাপন করে কাজ করে। বর্তমানে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, গেমিং কনসোল, ডিজিটাল ক্যামেরা, প্রিন্টার, ল্যাপটপ, জিপিএস রিসিভার প্রভৃতি যন্ত্রাদিতে ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। এই প্রযুক্তিতে খুব কম বিদ্যুৎ খরচ হয়। এটি ক্ষুদ্র পাল্লার বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়।

কিভাবে কাজ করে

ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে কম ক্ষমতা বিশিষ্ট বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে তথ্য পাঠানো হয়। এই যোগাযোগ ব্যাবস্থায় ২.৪৫ গিগাহার্ট্‌জ (প্রকৃতপক্ষে ২.৪০২ থেকে ২.৪৮০ গিগাহার্ট্‌জ-এর মধ্যে)-এর কম্পাংক ব্যাবহৃত হয়। শিল্প, বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যাবহৃত যন্ত্রের জন্য উপরিউক্ত কম্পাংকের সীমাটি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এখন প্রশ্ন হল যে ব্লুটুথ অন্যান্য তরঙ্গ নির্ভর যন্ত্রের কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি করে কিনা? উত্তর হল “না”। কারণ ব্লুটুথ কর্তৃক প্রেরিত সিগন্যালের ক্ষমতা থাকে মাত্র ১ মিলিওয়াট, যেখানে সেল ফোন ৩ ওয়াট পর্যন্ত সিগন্যাল প্রেরণ করে। অর্থাৎ ব্লুটুথের নিম্ন ক্ষমতার সিগন্যাল উচ্চ ক্ষমতার সিগন্যালে কোন ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে না।

ব্লুটুথ একসাথে ৮টি যন্ত্রের মধ্যে যোগাযোগ সাধন করতে পারে।তবে প্রত্যেকটি যন্ত্রকে ১০ মিটার ব্যাসার্ধের একই বৃত্তের মধ্যে অবস্থিত হতে হয়, কারণ ব্লুটুথ প্রযুক্তি চারিদিকে সর্বোচ্চ ১০ মিটার পর্যন্ত ক্রিয়াশীল থাকে।এখন প্রশ্ন যে, A যন্ত্রের সাথে B যন্ত্রের যোগাযোগের সময় কাছাকাছি অবস্থিত অপর দুটি যন্ত্র C ও D-এর মধ্যের ব্লুটুথ যোগাযোগ ব্যাবস্থা বাধাগ্রস্থ হয় কিনা?(কেননা দুই যন্ত্রযুগলই একই কম্পাঙ্কের ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যাবহার করছে)উত্তর হল “না”। কারণ এই সমস্যা সমাধানের জন্য ব্লুটুথ একটি পদ্ধতি ব্যাবহার করে যা কিনা “spread-spectrum frequency hopping” নামে পরিচিত। এই পদ্ধতিতে একই সময়ে একাধিক যন্ত্রযুগল একই কম্পাঙ্ক ব্যাবহার করে না।ফলে একে অপরের যোগাযোগ ব্যাবস্থাতে বাধার সৃষ্টি করে না। এ পদ্ধতিতে কোন একটা যন্ত্র নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে অবস্থিত কম্পাঙ্ক হতে ৭৯ টি পৃথক পৃথক কম্পাঙ্ক এলোমেলোভাবে গ্রহণ করে ও একের পর এক পরিবর্তন করে। ব্লুটুথের ক্ষেত্রে, ট্রান্সমিটার প্রতি সেকেন্ডে ১৬০০ বার কম্পাঙ্ক পরিবর্তন করে।ফলে একাধিক ভিন্ন ভিন্ন যন্ত্রযুগলের মধ্যে একই সময়ে একই কম্পাঙ্ক-এর তথ্য প্রেরণ অসম্ভব বললেই চলে।

Class সর্বোচ্চ অনুমোদিত হ্মমতা সীমা
(আনুমানিক)
মিলিওয়াট (mW) ডেসিবেল (dBm)
প্রথম শ্রেণী ১০০ mW ২০ dBm ~১০০ মিটার
দ্বিতীয় শ্রেণী ২.৫ mW ৪ dBm ~১০ মিটার
তৃতীয় শ্রেণী ১ mW ০ dBm ~১ মিটার

বেশির ভাগ হ্মেত্রে দ্বিতীয় শ্রেণীর ডিভাইসের কার্যকরী সীমা সর্বাপেক্ষা ঘটনেতে প্রসারিত করা হয় যদি তারা প্রথম শ্রেণীর transceiver তে সংযোগ করে, একটি নিখাদ দ্বিতীয় শ্রেণীর নেটওয়ার্কে তুলনা করেছে। এইটি উচ্চতর সুবেদিতার দ্বারা সম্পন্ন করা হয় এবং প্রথম শ্রেণীর ডিভাইসের প্রেরণ অধিকারী।

সংষ্করণ তথ্য হার
সংষ্করণ ১.২ ১ Mbit/s
সংষ্করণ ২.০ + EDR ৩ Mbit/s

মোবাইল ফোন দেখতে কেমন হবে, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা করছেন গবেষকেরা। তঁাদের যুক্তি, মোবাইল ফোন ভবিষ্যতে একদিন মানুষের শরীরের অংশই হয়ে যাবে।

অবশ্য নকশাবিদেরাও বসে নেই। এক খবরে ইয়াহু জানিয়েছে, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নকশাবিদ ব্রায়ান হাতের দস্তানাসদৃশ মোবাইল ফোন নির্মাণ করেছেন।
ব্রায়ান তঁার তৈরি প্রোটোটাইপ এ মোবাইল ফোনের নাম রেখেছেন `গ্লাভ ওয়ান’।

হাতের দস্তানার মতো এই মোবাইল ফোনের নিচের দিকে রয়েছে বাটন। মোবাইল ফোনটিতে সিম কার্ড যুক্ত করার স্থান ও ইউএসবির মাধ্যমে চার্জ দেওয়ার সুবিধা রয়েছে।
ব্রায়ান আরও জানিয়েছেন, মানুষ যেভাবে হাতের সাহায্যে মোবাইলে কথা বলার ভঙ্গি দেখায়, এই দস্তানা মোবাইল ফোনও সেভাবে ব্যবহার করা যাবে।

[ ভাল লাগলে পোস্ট এ  অবশ্যই লাইক দিবেন , লাইক দিলে আমাদের কোনো লাভ অথবা আমরা কোনো টাকা পয়সা পাই না, কিন্তু উৎসাহ পাই, তাই অবশ্যই লাইক দিবেন । ]


                                   ১৯৭১ সালে রে টমলিনসন প্রথম নেটওয়ার্ক ই-মেইল প্রদানের মাধ্যমে আমাদের কাছে অতি পরিচিত “@” সাইনটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করে। তার এই মূল্যবান অবদানের জন্য রেথিওন বিবিএন টেকনোলজিসের প্রকৌশলী টমলিনসনকে ইন্টারনেট “হল অব ফেম”-এর প্রথম ব্যাবহারকারী হিসেবে সম্মানিত করা হয়।

১৯৭১ সালে তিনি হোস্ট কম্পিউটারের নামের সাথে প্রাপকের নাম আলাদা করার জন্য “@” চিহ্ন ব্যবহার করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেন। টমলিনসন বলেন, “আরো সহজে এবং অধিকতর উপায়ে যোগাযোগের ব্যক্তিগত ইচ্ছাই ইমেইল উদ্ভাবনের পেছনে কাজ করেছে। আসলে আমি এমন একটি পদ্ধতি খুঁজছিলাম যেখানে বার্তা পাঠানোর সময় প্রাপককে সেখানে থাকতে হবে না। এবং প্রাপক তার সময় এবং সুবিধা মত বার্তাটি পড়তে এবং উত্তর দিতে পারবে।”

প্রথম কম্পিউটার যা ব্যবহার করে ই-মেইল প্রেরণ করেন টমলিনসন

টমলিনসন সর্বপ্রথম এসএনডিএমএসজি এবং সিপিওয়াইনেট প্রোগ্রাম একত্রিত করে আর্পানেটের জন্য নেটওয়ার্ক ইমেইল অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করে। যার মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে বার্তা প্রেরণ করা সম্ভব হয়। আর এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় মেইলিং অ্যাড্রেসের বিভিন্নতা বোঝানোর জন্য “@” চিহ্নটি ব্যবহার করেন। পরবর্তীতে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি ইমেইল সেবা চালু হয় এবং “ইউজার@হোস্ট” এর সৃষ্টি এবং এখন পর্যন্ত মানদণ্ড হিসেবে ধরা হয়।

এমআইটি সম্পর্কিত “ধারণা, উদ্ভাবন এবং উদ্ভাবক” হিসেবে সেরা ১৫০ জনের তালিকায় তিনি চতুর্থ স্থানটি দখল করে রয়েছেন। এছাড়া বিগত বছরগুলিতে তিনি আরও অনেক সম্মাননায় ভূষিত হন।

২০০০ সালে আমেরিকান কম্পিউটার মিউজিয়াম তাকে জর্জ আর স্টিবিৎজ কম্পিউটার পাওনিয়ার পুরষ্কার প্রদান করে। ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক অ্যাকাডেমি অব ডিজিটাল আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স তাকে ওয়েবি সম্মাননায় ভূষিত করে এবং রেন্সিল্যার অ্যালামনাই হল অব ফেম এ অভিষিক্ত করা হয়। ২০০২ সালে তিনি ডিস্কোভার ম্যাগাজিনের ইনোভেশন পুরষ্কার এবং ২০০৪ সালে ইনস্টিটিউট অব ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ার ইন্টারনেট অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। ২০০৯ সালে তাকে প্রিন্স অব অস্টিরিয়াস অ্যাওয়ার্ড এবং ২০১১ সালে এডওয়ার্ড রেইন কালাচারপ্রি কালচারাল পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়।