Archive for মে 8, 2012


মোগল সম্রাট শাহজাহান সম্রাজ্ঞী মমতাজমহলের প্রতি নিখাদ অনুরাগ পোষণ করতেন। শাহজাহান ও মমতাজমহল পরস্পরের প্রতি নিবিড় ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ থাকলেও তাদের বিবাহিত জীবন ছিল ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ। সম্রাট জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রাজপুত্র শাহজাহান বিদ্রোহ করেছিলেন। ফলে তাকে নানা দুর্গম স্থানে ছুটতে হয়েছে, যুদ্ধের ময়দানে লড়তে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পরাজিত হয়ে পালাতে হয়েছে। আর সবক্ষেত্রেই মমতাজমহল তাকে ছায়ার মতো সঙ্গ দিয়েছেন, তাকে উদ্দীপ্ত রেখেছেন। নীরবে সব যাতনা সহ্য করেছেন। তবুও ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে একদিনের জন্য স্বামীকে ছেড়ে অন্য কোথায়ও থাকেননি। একসময় সবকিছুরই অবসান ঘটে। জাহাঙ্গীরের ইন্তেকালের পর শাহজাহান হন ভারতবর্ষের সম্রাট। কিন্তু রাজকীয় সুখ মমতাজমহলের ভাগ্যে ছিল না। শাহজাহানের সিংহাসনে আরোহণের মাত্র তিন বছরের মধ্যে তিনি ইন্তেকাল করেন। প্রিয়তমার ইন্তেকালে শাহজাহান শোকে ভেঙে পড়েন। তিনি এতো শোকাভিভূত হয়েছিলেন যে, রাতারাতি তার (এ সময় তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৩৮ বছর) সব চুল সাদা হয়ে গিয়েছিল। দু’বছর পর্যন্ত তিনি ভালো খাবার, পোশাক, সংগীত থেকে দূরে থেকেছেন, সব ধরনের আনন্দ বিলাসিতা বর্জন করেছিলেন। তাজমহল নির্মাণের কাজে হাত দেওয়ার পর থেকে তিনি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকেন। বলা হয়ে থাকে, তাজমহলের নির্মাণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল দুঃখের সময়। তাই তাজ হলো বেদনার এক স্মারক।মমতাজমহল ইন্তেকাল করেন ১৬৩১ সালে। তাজমহলের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৬৩২ সালে। আর শেষ হয়েছিল ১৬৪৮ সালের দিকে। ১৬৩২ সালের দিকেই মূল কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল। অন্যান্য অংশ তৈরি হয়ে যায় ১৬৪৩ সালের দিকে। তবে ১৬৪৮ সাল পর্যন্ত ডেকোরেশন চলতে থাকে। জীবনের শেষ দিনগুলোতে শাহজাহান মাইল খানেক দূরে অবস্থিত শীষমহলের কাঁচঘেরা কক্ষে বসে সর্বক্ষণ তাকিয়ে থাকতেন তাজমহলের দিকে। শাহজাহান ১৬৫৮ সালে অন্তরীণ হন এবং ১৬৬৬ সালে ইন্তেকাল করেন।

আপনি কি তাজমহল সম্পর্কে নিন্মোক্ত তথ্য গুলো জানেন:

১ তাজমহল তৈরী হয় মমতাজের জন্য কিন্তু সম্রাজ্ঞী মমতাজ ছিলেন শাজাহানের ৭ বিবির মধ্যে চতুর্থ

২ মমতাজ কে বিয়ের জন্য শাজাহান তার পূর্বের স্বামীকে হত্যা করে

৩  মমতাজ তার ১৪তম সন্তান জন্মদানের সময় মৃত্যুবরন করে

৪ এরপর শাজাহান মমতাজের ছোটবোন কে বিয়ে করেন

এখন আপনিই বলুন এতসবের মাঝে ভালোবাসা টা কোন জায়গায় ?


বিখ্যাত তাজমহলের নাম তো সকলে জানে৷ কিন্তু মোগল সম্রাট শাহজাহানের অমর কীর্তি এ তাজমহলকে সামনাসামনি দেখার সৌভাগ্য কয়জনেরই বা হয়ে থাকে? এবার বাংলাদেশের চিত্র পরিচালক আহসানুল্লাহ মনি তেমনই এক সুযোগ করে দিতে যাচ্ছেন৷

সম্রাট শাহজাহানের প্রেমের নিদর্শন তাজমহল

কথায় আছে দুধের সাধ ঘোলে মেটানো৷ আহসানুল্লাহ মনির উদ্যোগটিও তেমনই৷ ভারতের আগ্রার তাজমহল দেখার শখ যারা মেটাতে পারেননি তারা ঢাকার অদুরে গিয়ে দেখে আসতে পারেন আহসানুল্লাহ মনির তাজমহল৷ যারা আগেই তাজমহল দেখেছেন তারা হয়তো আহসানুল্লাহ মনির তাজমহল দেখে অবাক হতে পারেন৷ কারণ হুবহু একই রকম৷ আকৃতি তো বটেই এমনকি পাথরের দেয়াল সহ সব জায়গাতে রয়েছে দুই তাজমহলের অসাধারণ মিল৷

এরকম একটি উদ্যোগের কারণ সম্পর্কে মনি বলেন, প্রত্যেকেই চায় আগ্রার তাজমহল দেখতে কিন্তু অনেক বেশী খরচের কারণে খুব কম বাংলাদেশীই এ সুযোগ পায়৷ সম্রাট শাহজাহান তার প্রিয়তম স্ত্রীকে ভালোবেসে তাজমহল করেছিলেন৷ আর আমার এই নতুন তাজমহল সম্রাট শাহজাহানের প্রতি ভালোবাসা থেকে৷ তার এই নতুন তাজমহল কেবল বাংলাদেশ নয়, বিদেশ থেকেও পর্যটকদের টেনে আনবে বলে আশা করেন মনি৷

এবার হয়তো পর্যটকরা বাংলাদেশেও ছুটে আসবে তাজমহল দেখতে

নতুন এই তাজমহল তৈরীতে খরচ হয়েছে ৫৮মিলিয়ন ডলার৷ পাঁচ বছর লেগেছে এটি নির্মাণ করতে৷ মনি বলেন, আমরা নির্মাণ কাজে যন্ত্র ব্যবহার করেছি বলে সময় কম লেগেছে নইলে এটিও হয়তো তৈরী করতে আসল তাজমহলের মত ২০ বছর সময় লেগে যেতো৷ এ কাজের জন্য ভারত থেকে ছয়জন বিশেষজ্ঞ নিয়ে এসেছেন মনি৷ তারা প্রথমে আগ্রার তাজমহলের পুরো মাপজোক নিয়ে এসেছেন৷ তারপর এখানে এসে হুবহু একই তাজমহল নির্মাণ শুরু করেন৷ এছাড়া ইতালি থেকে নিয়ে আসা হয়েছে মার্বেল ও গ্রানাইট পাথর এবং বেলজিয়াম থেকে হীরা৷ নতুন তাজমহলের গম্বুজটি বানাতে ১৬০ কেজি তামা ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্যতম চিত্র পরিচালক মনি৷

রুপময় বাংলাদেশের যাত্রা

একদিকে যখন চলছে নতুন তাজমহল নির্মান তখন বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার চালু করলো রুপময় বাংলাদেশ এর৷ বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে তুলে ধরতে এখন এটিই হবে স্লোগান৷ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ফখরুদ্দিন আহমেদ রোববার এই নতুন ব্রান্ডিং উদ্বোধন করেন ৷


সাইরেন বা মহাসমুদ্রের মৎস্যকন্যার কথা আমরা জানি। যে তার মধুর কণ্ঠে নাবিকদের গান শুনিয়ে বিমোহিত করে জলের অতল তলে ডেকে নিয়ে যায়। যে নাবিক গান শুনে বিমোহিত হয়ে তার আকর্ষণে ছুটে যায়, সে আর কখনো ফিরে আসে না। পৃথিবীর অন্য দেশের মতো আমাদের দেশের রূপকথায়ও মৎস্যকন্যার গল্প বেশ প্রচলিত। তবে অর্ধেক মাছ আর অর্ধেক মানবী আকৃতির মৎস্যকুমারীর নাম বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম।স্কটিশ, আইসল্যান্ডিক এবং আইরিশ লোককাহিনীর মৎস্যকন্যার নাম সেলকাই। সেলকাইয়ের গল্পটিও কিছুটা ব্যতিক্রমী। কিন্তু গল্পের কাহিনীবিন্যাস প্রায় মৎস্যকন্যার মতোই। প্রচলিত এ লোককথা নিয়ে তৈরি হয়েছে চলচ্চিত্র। ‘দ্য সিক্রেট অব রোয়ান ইনিশ'[ (ঞযব ঝবপৎবঃ ড়ভ জড়ধহ ওহরংয) তেমনই একটি চলচ্চিত্র, যার গল্প এ রকম_ সেলকাই নামে এক মেয়ে একদিন তার চামড়া খুলে রেখে সূর্যস্নান করছিল। এক জেলে সেটি চুরি করে বাড়িতে নিয়ে যায় এবং লুকিয়ে রাখে। ফলে মেয়ে সেলকাই ওই জেলের বাড়িতে চলে আসে এবং জেলের বউ হয়ে যায়। প্রায় এক বছর পর তার ছেলেমেয়েরা লুকিয়ে রাখা চামড়াটি খুঁজে পায় এবং মাকে জিজ্ঞাসা করে, এটি কী? জেলের বউ হয়ে থাকা সেলকাই তার চামড়া ফিরে পেয়ে খুশি হয় এবং আগের রূপে সে সমুদ্রে ফিরে যায়। কিন্তু সেলকাইয়ের লোককাহিনী একটু অন্যরকম। লোককাহিনীর বর্ণনা অনুযায়ী সেলকাইরা আসলে বিভিন্ন ধরনের মারম্যান অথবা সামুদ্রিক আত্মা, যারা জন্মের পর সমুদ্রে চলে যায়। এরা নিজের চামড়া বদল করে মানুষের রূপ ধারণ করতে পারে। সাধারণভাবে সেলকাইয়ের গল্প রোমান্টিক ট্র্যাজেডিধর্মী। লোকবিশ্বাস আছে যে, সেলকাইরা মানুষের বেশে মানুষের সঙ্গে প্রেম করে আবার বিয়েও করে। পুরুষ সেলকাই মানুষের আকৃতিতে খুব সুদর্শন হয়। তারা মেয়েদের আকর্ষণ করার প্রচণ্ড শক্তি অর্জন করে। তবে তারা সেসব মানুষকে খোঁজে, যারা সংসারজীবনে অসুখী। অসুখী নারীরা সবসময় সেলকাই স্বামীর অপেক্ষা করে। যদি কোনো নারী পুরুষ সেলকাইয়ের সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে, তাহলে তাকে সমুদ্রের তীরে গিয়ে সাত ফোঁটা চোখের জল সমুদ্রে ফেলতে হয়। মেয়ে সেলকাই খুব সুন্দরী আর ভালো স্ত্রী হয়। ওদের সত্যিকার বাড়ি সমুদ্রে। যেসব সেলকাই ডাঙায় এসে মানুষের সঙ্গে সংসার করে, তারা মাঝেমধ্যে এক দৃষ্টিতে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে থাকে। কোনো স্ত্রী সেলকাই যদি কখনো মানুষের সংসার ছেড়ে সমুদ্রে চলে যায়, তবে সে আর কখনো তার স্বামীকে দেখতে আসে না। আর দেখা হলেও এড়িয়ে চলে। কিন্তু সে তার সন্তানদের প্রায়ই দেখতে আসে এবং হাত নেড়ে নেড়ে তাদের সঙ্গে খেলা করে। এমন অনেক গল্প প্রচলিত আছে আইরিশ, আইসল্যান্ডিক এবং স্কটিশ পুরাণে।


আজ কম্পিউটার প্রয়োজনীয় কিছু মৌলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে, যা যেকোনো কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ ও সহায়ক।

কম্পিউটারের তথ্য পরিমাপের একক

বাইনারী পদ্ধতিতে ব্যবহৃত অঙ্ক শুন্য (০) এবং এক (১) কে Bit বলে। ইংরেজী Binary শব্দের Bi ও Digit শব্দের t নিয়ে Bit শব্দটি তৈরী হয়েছে। কম্পিউটার স্মৃতিতে রক্ষিত ০ ও ১ এর কোড দিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এ কারণে কম্পিউটারের স্মৃতির ধারণ ক্ষমতার ক্ষুদ্র একক হিসাবে Bit শব্দটি ব্যবহৃত হয়। কম্পিউটার এই ০ ও ১ দ্বারা যে বিশেষ পদ্ধতিতে কাজ করে তাকে কম্পিউটারের যান্ত্রিক ভাষা বলা হয়।

Bit, Byte, KB, MB, GB এবং এর মধ্যে সম্পর্ক

বিট হচ্ছে কম্পিউটারের সংখ্যা পদ্ধতির ক্ষুদ্রতম একক। বাইট দিয়ে সাধারনত স্মৃতির ধারণ ক্ষমতা প্রকাশ করা হয়। এদের মধ্যে সম্পর্ক নিচে তুলে ধরা হলঃ

8 Bit                             =          1 Byte

1024 Bytes                  =          1 Kilobyte (KB)

1024 Kilobytes            =          1 Megabyte (MB)

1024 Megabytes         =          1 Gigabyte (GB)

1024 Gigabytes           =          1 Terabyte (TB)

র‍্যাম ও রম

 

RAM (Random Access Memory) একটি অস্থায়ী স্মৃতি ভান্ডার। Input Device হতে সকল তথ্য RAM এ জমা হয়। প্রধান স্মৃতির এ অংশে যখন তখন নতুন তথ্য লেখা যায়, তথ্য পড়া যায় এবং ইচ্ছা করলে তথ্য মুছে ফেলা যায়। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকলে অর্থাৎ কম্পিউটার বন্ধ থাকলে, র‍্যামের পূর্বের তথ্য মুছে যায়। র‍্যামের মাধ্যমে তথ্য পড়া ও লেখা উভয় কাজই সম্পাদন করা যায় বলে একে লিখন পঠন স্মৃতিও বলা হয়ে থাকে।

ROM (Read Only Memory) একটি স্থায়ী স্মৃতি ভান্ডার। প্রধান স্মৃতির এই অংশটি স্থায়ী, অপরিবর্তনীয় ও অধংসাত্বক স্মৃতি। Computer এ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিলেও এই স্মৃতিতে রক্ষিত তথ্য মুছে যায় না। রমে নতুন কিছু সংযোজন, সংশোধন বা পরিবর্তন করা যায় না। এই অংশে লিখিত তথ্য শুধুমাত্র পড়া যায়, কিন্তু লেখা যায় না। তাই একে স্থায়ী স্মৃতি হিসেবে অভিহিত করা হয়।


বিশ্বজুড়েই লিভ টুগেদার আস্তে আস্তে জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। তবে বিশ্বমোড়ল আমেরিকায় লিভ টুগেদারের জনপ্রিয়তা নিছক কোন পারিবারিক কারনে নয়। আমেরিকানরা লিভ টুগেদার করছে অর্থ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে। বিয়ে হয়নি, অথচ স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় একত্রে বসবাস করছেন এমন আমেরিকান নারী-পুরুষের সংখ্যা ৭৫ লাখ। ইউএস সেনসাস ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ৬৯/৭০ বছরের অধিক বয়সী অনেক অবিবাহিত আমেরিকানও ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। বিয়ে মানেই পারিবারিক মেলবন্ধন। দায়-দায়িত্ব সন্তান-সন্ততি ইত্যাদি নানা বিষয়ের জটিল সমাবেশ। আর এই জটিলতা এড়াতেই বিয়ে ছেড়ে লিভ টুগেদারের দিকে ঝুঁকছেন আমেরিকানরা। শুধু আমেরিকানরাই নয়, ওখানে বসবাসরত বাংলাদেশীসহ অন্যান্য অভিবাসীদের মধ্যেও লেগেছে এই ছোঁয়া। লিভ টুগেদারের ক্ষেত্রে পুরুষ আর নারী একেবারে স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় একসঙ্গে বসবাস করে। সামাজিকভাবে জৈবিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি উভয়ে সমানভাবে সংসারের খরচ বহন করে। আর শেষ বয়সে অবসরের ভাতা পৃথকভাবে পাওয়ায় তাদের দিন কাটছে চমৎকারভাবে।

গত দু’বছর ধরেই অর্থনৈতিক মন্দা আর দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে স্বল্প আয়ী আমেরিকানরা নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছেন। এমনি কঠিন পরিস্থিতিতে যারা চাকরি হারাচ্ছেন, তাদের অবস্থা অকল্পনীয়। কিন্তু জীবন তো থেমে থাকে না। বিকল্প হিসেবে অনেকের বিয়ের বয়স পেরিয়ে গেলেও শুধু খরচের কথা ভেবে বিয়ে করা হয়ে ওঠে না। আর তাই বিকল্প উপায় খোঁজা। আবার অনেকে ২০/২৫ বছর যাবত বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড হিসেবে বাস করে সন্তানাদি নেয়ার পরও আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হননি। চাকরি অথবা ব্যবসা থেকে অবসর নিয়েছেন, তবুও বিয়ে করছেন না। এমন আমেরিকানদের ব্যাপারে ইউএসএ টুডে অনুসন্ধানী এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে সামগ্রিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে উদাহরণ টেনে বলা হয়েছে, ৭১ বছর বয়েসী টম ব্ল্যাক এবং ৬৯ বছর বয়েসী গ্রিটা কহেন গত ১৩ বছর যাবত ‘লিভ টুগেদার’ করছেন। দিনভর একত্রে চলাফেরা করেন। কেনাকাটা করেন একত্রে। রান্না অথবা হোটেলের ব্যয়ও ফিফটি ফিফটি হারে বহন করেন। এর ফলে এ দম্পতির অবসর সময় আনন্দে কাটছে। অবসরভাতা অথবা সোস্যাল সিকিউরিটি বেনিফিট হিসেবে তারা আলাদাভাবে যে চেক পাচ্ছেন তা দিয়ে উভয়ের মাসিক খরচে ঘাটতি পড়ে না। একইভাবে অনেক কর্মজীবী প্রেমিক-প্রেমিকারাও একই বিছানায় থাকা সত্বেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছেন না খরচের কথা চিন্তা করে। তাদের ধারণা, বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বাস করতে ব্যয় বাড়বে। এই ধারা চলতে থাকলে আমেরিকানদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কের ভিত্তি শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকে, এখন দেখার বিষয় সেটাই।


শ্বাসকষ্টজনিত রোগের মধ্যে COPD অন্যতম। দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা (Chronic morbidity) সৃষ্টিকারী এবং মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ হিসেবে এই রোগটি বিশ্বব্যাপী পরিগণিত হয়ে আসছে। বহুলোক এই রোগে ভোগে এবং কম বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। এটি হলো ফুসফুসের এমন একটি রোগ যেখানে শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে রোগী শ্বাসকষ্টে ভোগে। এই শ্বাসকষ্ট দিন দিন বৃদ্ধি পায় যা আর কখনো সম্পূর্ণভাবে আগের অবস্থায় ফিরে আসে না।

যাদের COPD বেশি হয় : এ রোগের জানা কারণগুলোর মধ্যে ধূমপান অন্যতম। সাধারণত যে যত দীর্ঘ সময় ধূমপান করবে তার ঈঙচউ হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। কর্মক্ষেত্রে জৈব-অজৈব ধূলিকণা বেশি হলে রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে যারা কাঠ, শুকনো খড় ইত্যাদি ব্যবহার করেন বায়ুদূষণ বেশি হলে ফুসফুসের সংক্রমণ হলে, যেমন ঘন ঘন ভাইরাস সংক্রমণ যারা অপুষ্টিতে ভুগছে। সাধারণত নারীদের তুলনায় পুরুষরাই বেশি COPD আক্রান্ত হয়। তা ছাড়া জম্মগতভাবে ফুসফুস ঠিকমতো গড়ে না উঠলে এবং আলফা ওয়ান এনটি ট্রিপসিন (Alpha-one antitrypsin) নামক এনজাইম-এর ঘাটতি হলেও এ রোগ হতে পারে।

রোগের লক্ষণ : শ্বাসকষ্ট ও কাশি COPD রোগের প্রধান লক্ষণ। শ্বাসকষ্ট সাধারণত কমবেশি সবসময় থাকে এবং চলাফেরায় বৃদ্ধি পায়। সঠিক চিকিৎসা না নিলে শ্বাসকষ্ট দিন দিন বাড়তে থাকে। কাশির সঙ্গে কফ থাকতে পারে এবং কোনো কোনো সময় শ্বাসকষ্ট, কাশি এবং কফের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।

রোগ নির্ণয় : Spirometry পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় ছাড়াও রোগের তীব্রতা পরিমাপ করা যায়, যা সঠিক চিকিৎসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

চিকিৎসা : সাধারণত বেশিরভাগ COPD রোগী প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে আসেন না। তাই কার্যকর চিকিৎসার জন্য দরকার_

* রোগের তীব্রতা নির্ণয় এবং পর্যবেক্ষণ * রোগের কারণসমূহ নির্ণয় এবং সম্ভব হলে কারণসমূহ দূর করাCOPD রোগের সঠিক ওষুধ প্রয়োগ এবং রোগীদের সঠিক পুনর্বাসন (Rehabilitation)

COPD রোগ সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়, কিন্তু সঠিক চিকিৎসায় রোগের লক্ষণ যেমন : শ্বাসকষ্ট, কাশি ইত্যাদি অনেক কমে যায়, রোগীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, রোগ বৃদ্ধি এবং জটিলতা হ্রাস পায়।

COPD রোগীর চিকিৎসা সাধারণত ওষুধ দ্বারা এবং বিভিন্ন রকম পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা হয়। রোগের তীব্রতা অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। সাধারণত শ্বাসকষ্ট কমানোর জন্য বিভিন্ন রকম ইনহেলার ব্যবহার করা হয়, যেমন- সালবিউটামল, ইপ্রাট্টপিয়াম, করটিকোস্টবেয়ড ইত্যাদি। জীবাণু সংক্রমণ ঘটলে এন্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে। রোগের তীব্রতা বেশি হলে রোগীকে অনেক সময় দীর্ঘমেয়াদি ঙ২ দেওয়ার প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া রোগীকে ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং নিউমোনিয়া রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হলে ঘন ঘন রোগ বৃদ্ধি এবং জটিলতা অনেকাংশে কমে যায় COPD যেহেতু দীর্ঘমেয়াদি (পযৎড়হরপ) রোগ এবং সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য নয়, তাই COPD রোগীদের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চিকিৎসার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায় হলো রোগীকে তার রোগ, রোগের কারণ এবং তার পরিণতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া। রোগ বৃদ্ধির লক্ষণগুলো অবহিত করা এবং কখন চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া। ধূমপায়ীদের ক্ষেত্রে ধূমপান বর্জনে সাহায্য করা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরিশেষে একটি কথা না বললেই নয়। আমাদের দেশে অনেক চিকিৎসক COPD রোগীকে অ্যাজমা হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন এবং সঠিক চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হন। এ ক্ষেত্রে একজন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞই পারেন একজন COPD রোগীকে অনেকটা সুস্থ-স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে।

পরিচালক, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।
ফোন : ০১৭১১-১৭১৬৩৪; ৮৩৩৩৮১১